রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ৬ষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই তা লক্ষ্য করে আসছি। সেটাকে নিরুৎসাহিত করতে আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা শিগগিরই একটা সমাধান বের করবেন। রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন এবং আমাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন, কমিটি সেই ব্যবস্থা করবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেষ্টনী, টহল রাস্তা ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা এরইমধ্যে প্রকল্পের কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ করেছে। কোনো কোনো জায়গায় ৯৯ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। তারা আমাদের এপিবিএনের কাছে পর্যায়ক্রমে তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শুধু নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো তৈরি বাকি রয়েছে। বাকি সব কাজ শেষ হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আজ আমরা যে রিপোর্ট দেখতে পেলাম, সে অনুসারে আমরা ৬৫ শতাংশ রোহিঙ্গাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছি। এটা আরও ভালো জায়গায় অর্থাৎ আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নিয়ন্ত্রণ, পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিভিন্ন এনজিও, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করেছে বলেও জানান তিনি।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য ভালো মানের হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, একটা দীর্ঘ দাবি ছিল যে, সেখানে স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে হবে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আমাদের ভাসানচরে ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা কমিউনিটি গেছে। সেখানে একটি ভালো হাসপাতাল হওয়া দরকার। আজ বৈঠক তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। হাসপাতালটি যাতে আরও সমৃদ্ধ করা হয় ও শিগগিরই তা কার্যকারিতায় নিয়ে আসতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনা করেছি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বন্ধু দেশগুলোও কাজ করছে। আমাদের আশা, শিগগিরই এর সমাধান হবে।
যুক্তরাষ্ট্র কী পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে নিতে চায়? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিজেদের ভিসা দিয়েই বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের নিচ্ছে। বছর তিনেক আগে আমার সঙ্গে জাতিসংঘে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি তখন রোহিঙ্গা নেওয়ার জন্য উৎসাহী ছিলেন। আজ জানতে পারলাম তিনি মাত্র সাতজন নিয়েছেন! আর অস্ট্রেলিয়া নিয়েছে ২৪ জন! এটা সংখ্যায় খুবই কম। এ নিয়ে কথা বলে সবার মনোযোগ টানতে চাই না। তবে যুক্তরাষ্ট্র কতজন এবং কীভাবে নেবে; তা নিয়ে বাংলাদেশকে বিস্তারিত জানায়নি।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
পাঠকের মতামত